বাংলা গল্পসল্প

"BanglaGolpoSolpo" is all about Bengali stories, Bengali Poems, Articles etc. 'বাংলা গল্পসল্প'র তরফ থেকে সকল পাঠকগণ, শ্রোতাগণ ও লেখকবন্ধুদের জানাই হার্দিক অভিনন্দন, ভালোবাসা, প্রীতি ও শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা। এই অনলাইন পাবলিশিং ওয়েবসাইটটির অনবদ্য প্রচেষ্টা স্বরূপ বিভিন্ন ধরনের বাংলা সাহিত্যের উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলা জগতের গর্বিত বাঙালীর সন্নিকটে নবাগত তরুণ প্রজন্মের সাহিত্যিকগণের আত্মপ্রকাশ করার নিতান্তই একটি প্রয়াসমাত্র ।

Wikipedia

Search results

Pageviews

নিচের follow button টির দ্বারা আপনি এই ওয়েবসাইট টি follow করতে পারেন ।

Wednesday, 21 February 2018

হালুয়া খেয়েছে কালুয়া / চাম্পু অ্যাডভেঞ্চারস্' সিরিজের গল্প / হাসি মজার গল্প / কিশোরদের গল্প

 

" হালুয়া খেয়েছে  কালুয়া "

     দুপুরে  আমরা  হাজিবাগানে দিব্যি আড্ডা দিচ্ছি ।   যতসব  আজগুবি ভূতুরে  গল্প   আর  হাসিঠাট্টা  চলছে । 
হঠাৎ  লক্ষ্য করলাম   বাগানের  উত্তর-পশ্চিম কোণে  পড়ে থাকা শিশুগাছের  গুঁড়িটাতে  চাম্পু বসে আছে ।
 কিন্তু চাম্পুর পাশে  ওই  ছেলেটা কে ! 
আরে,  এ তো বিহারী গলির বিহারী কালুয়া !
কিন্তু  চাম্পু   কালুয়ার সাথে কি করছে !  ফিস্ ফিস্ করে  কিসের গল্প করছে ওরা !  কিছু  বুঝে উঠতে পারলাম না । 
 কালুয়ার  সাথে  চাম্পুর  এত গায়ে পড়া  ভাব  দেখে  আমি অবাক হলাম ।  কালুয়াকে তো  চাম্পু একদমই দেখতে  পারত না । 
তবে এখন কি হল !
একটু কাছে গিয়ে দেখলাম,   বিহারী কালুয়াকে  চালতার  আঁচার  খাওয়াচ্ছে  চাম্পু !
কিন্তু কেন ?
কি ব্যাপার !
 এর পিছনে কি কোনো  রহস্য আছে ! 
নিশ্চয় চাম্পুর  কোনোরকম  চালাকি রয়েছে ।   কিন্তু  কিরকম চালাকি,  তা  ঠাহর করতে পারলাম না ।
আমি একটু রহস্য করে বললাম,  কি রে চাম্পু !  কি করছিস  ভাই,  কালুয়াকে কি বোঝাচ্ছিস  ভাই !
আমাকে দেখে চাম্পু  মুখটা কেমনধারা একটা করল ।   তবে  বুঝতে অসুবিধে হল না যে   আমাকে দেখে ওর মোটেও ভালো লাগেনি ।  
কিন্তু চাম্পু আর কারও সাথে খারাপ ব্যবহার  করলেও   সচরাচর  আমার সাথে খুব একটা খারাপ ব্যবহার করে না ।   কিন্তু  ও  যেরকম মুখাভঙ্গি করল তাতে বুঝলাম
আমার উপস্থিতি ওকে বিরক্ত করেছে  এবং  বেশিক্ষণ এখানে থাকলে  ও  আরও  বিরক্ত হতে পারে ।  
 অতএব   অতকিছু  না ভেবে বাগানের  এদিকটাতে চলে এলাম  এবং  আমাদের  আড্ডাতে  মেতে গেলাম ।

      আগামীকাল ছোটপূজো ।  প্রতিবছর  আমাদের  পশ্চিমপাড়ার  পগারের  শিবপুকুরে ছোটপূজার  আয়োজন করা  হয় । 
 পুকুরের চারিদিকে লাইট দিয়ে সাজানো হয়    দেখতেও বেশ ভালো লাগে,   আর পুকুরের ঘাট জুড়ে ছোট্ট একটা মেলা বসে । 
  হাজার  হাজার  পূজার্থীর ও  পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটে এই  ছোট্ট পুকুরখানা   জুড়ে ।   স্থানীয় লোকেরাও  ভিড় জমায় ।
  আমরাও দল  বেঁধে যায়  মেলা দেখতে ।   চাম্পুই  আমাকে বাড়ি থেকে  ডেকে নিয়ে যায় ।  আগের বারে এবং  তারও আগের বারে   তাই করেছিল ।

 ঝুড়িতে  নানান  রকমের  ফল মাকড়  নিয়ে উপস্থিত হয় পূজার্থীরা,   আর  আমরা হাঁ করে দাঁড়িয়ে   তাকিয়ে থাকি  সেই ফল ভর্তি ঝুড়িগুলোর দিকে ।   
বিকেল বেলা পূজা টুজো করে    পরের দিন  ভোরবেলায়  আবার পূজা করতে আসে   তারা ।    কেউ কেউ আবার তাসা পার্টী  বা
বক্স বাজিয়ে  পূজো করতে আসে ।   পুরো বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত  আমরা খুব মজা করি  সেদিন ।
  আবার  ভোরবেলায়  বাজনা শুনে ঘুম ভেঙে গেলে   এক ছুটে পুকুরঘাটে চলে আসি ।   পূজো শেষ হলে ওরা  প্রসাদ হিসেবে  ঠেকুয়া দেয়,  ফল দেয় । 
  আমার  ঠেকুয়া খেতে খুব  ভালো লাগে  কিন্তু  চাম্পুর আবার ঠেকুয়া খেতে ভালো লাগেনা ।   চাম্পুর  হালুয়া খেতে ভালো লাগে,  কিন্তু হালুয়া তো বিলি করে
না,  ওগুলো তো  বাড়ীতে খাওয়ার জন্য বানায় । 

   চাম্পু  আবার  হাত সাফাই করতে উস্তাদ,  কোথায় শিখেছে কে জানে ।
গতবারের  পূজোর সময়  ঝুড়িতে পাকা কলার কান্দি  থেকে   কত যে কলা  গায়েব করেছে  তার নাই  ঠিক ।   আমাকেও দিয়েছে অনেকবার,   প্রথমে খেতে
চাইনি  চুরি করা বলে ।   কিন্তু পরে   চাম্পু যখন বলল   যে  এগুলো নাকি  ভগবানের প্রসাদ ।   অনেকবার  চেয়েও  যখন দিল না তখন
বাধ্য হয়েই  তাকে  চুরি করতে হয়েছে ।   ভগবানের প্রসাদ   খেলে নাকি  কোনো  পাপ হয় না ।
  তখন  আমিও  গব গব করে গিলে ফেললাম । 
এবারেও ভগবানের  প্রসাদ পাবো তো ।  কিন্তু  চাম্পু যে   আমাকে পাত্তাই  দিচ্ছে না ।   

       কথাটা চাম্পুকে  স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার । 
  কিন্তু  কোথায় সে ?   তার টিকি টুকুরও দেখা মেলা ভার  ।  
সব  সময়  সে  ব্যস্ত  !  কিন্তু কিসের যে  এত  ব্যস্ততা    বুঝতে পারিনা ।    যাগ্ গে  সন্ধ্যে বেলায়  মনে করিয়ে দেবো ।
  বিকেল গড়িয়ে  আসছে দেখে  আমরা স্কুলমাঠে  ব্যাটবল  খেলতে  চলে  গেলাম ।

      অনেকক্ষণ হল  খেলা শুরু হয়ে গেছে ।   হঠাৎ  কুতুব ওভার  বাউন্ডারি লাগিয়ে দিল । 
 আমার  মাথার ওপর দিয়ে বলটা  বেরিয়ে গেল,  ধরতে পারলাম না ।   উত্তরদিকের  কচুরীপানার ডোবাতে   বলটা
পড়েছে ।   একহাঁটু জলে নেমে বলটা তুলে নিলাম ।   বলটা নিয়ে মাঠের দিকে ফিরতেই  দেখলাম   চাম্পু ।   চাম্পু  আর  সেই বিহারী
কালুয়া ডোবার ধারে  পরিত্যক্ত ভাঙা ইঁটের   টিলায় বসে আছে ।    ডোবাটার  দিকে মুখ করে কিছু একটা খাচ্ছিল,  আমাকে দেখে লুকিয়ে নিল ।  
এতক্ষণ ধরে খেলছি কিন্তু  একবারও  ওদের লক্ষ্য  করিনি ।   চাম্পু  আমাকে  দেখেও   এমনভাবে  না দেখার ভান করল  যেন আমাকে চেনেই না  ।
  চাম্পুর  এমন ব্যবহারে   আমার মোটেও  রাগ হল না   বরং   আমি  একটু  অবাক  হলাম । 

   খেলা শেষে  মাঠে বসে গল্প করছিলাম ।    হঠাৎ   কুতুব  বড়মানুষী গলায়  বলল,
কি ব্যাপার রে !  কালুয়ার সাথে চাম্পুর দোস্তি   কবে থেকে হল । 
আমি কিছুটা বিস্মৃত হয়েই  বললাম,   কি  জানি !
বললাম, " কাল তো  কালুয়াদের পূজো ।   ওদের গলিতে  তাসা পার্টীর কত  লোক এসেছে,   গান বাজনা  হচ্ছে ।    সেসব ছেড়ে  কালুয়াটা  চাম্পুর সাথে কি করছে   বলত ।! "
সবাই চুপ করে রইল ।     আমরা কেউই  এর  রহস্য ভেদ করতে পারলাম না ।    আমরা যে যার বাড়ীতে ফিরে গেলাম । 

      সন্ধ্যে বেলায় দোকান করতে বাইরে এসে  আবার চাম্পুকে দেখলাম ঐ কালুয়ার সাথে ।   হাজীবাগানের পাশে অন্ধকার ভুতুরে গলিটাতে কি যেন একটা করছে ।
 কালুয়ার হাতে একটা জলন্ত  ধূপকাঠি ।

  এই গলি দিয়ে যেতে আমার খুব ভয় করে ।  কিন্তু কালুয়া তো  সন্ধ্যে হলে  ঘর থেকেই বেড়োয় না ।   আর যদিও কোনো কারণে
বেড়োয়  তবে  একা একা কখনও এই গলি পেরোয় না ।   কারো সাথ না পেলে  এই রাস্তা পার হয় না । 

 আস্তে আস্তে  ওদের দিকে  এগিয়ে যাচ্ছি ঠিক এমন সময় ফটাস্ করে কি  একটা শব্দ হতেই  পুরো আঁতকে উঠলাম ।   বুকটা  ধড়াক্ ধড়াক্  করতে শুরু করে দিল । 
  ধানী পটকার  শব্দ ।  খুব জোরে না হলেও   হঠাৎ  করে কানে ঢুকল কিনা  তাই চমকে উঠলাম !
  বাপ্ রে !  জান বাঁচা,  লাখো পায়ে । 
আমাকে হাঁসফাঁস করতে দেখে কালুয়া ফ্যাঁকফ্যাঁক করে হেসে ফেলল ।   ইচ্ছে  করল  কালুয়া কানের  দুআঙুল  নিচে একটা কষিয়ে দিই । 
 না থাক্  গে,  কি দরকার  শুধু শুধু ঝামেলা পাকানোর !
   চাম্পু  কালুয়াকে পটকা ফাটানো শেখাচ্ছে  তাও আবার হাতের  মধ্যে রেখে । 
বড়ো আশ্চয্য ব্যাপার !
 কালুয়ার হাতের মধ্যে একটা ধানী পটকা আর  কালুয়ার হাতের কনুইটা চাম্পু  ধরেছে ।   কালুয়া  দিব্যি  হাতে পটকা ফাটালো ।
   অবশ্য  চাম্পু  ওর  হাতটা ধরেছিল ঠিকই,  কিন্তু ফাটালো তো কালুয়ায় নাকি !   আমি থ  হয়ে গেলাম ।   আমারও সাহসে কুলোয় না  হাতে রেখে পটকা ফাটানোর ।
 কিন্তু  চাম্পুর কাছে এসব যেন বাঁ হাতের খেল ।    কি করে পারে কে জানে !

    চাম্পুকে দুবার সাড়া দিলাম কিন্তু  সে আমাকে তোয়াক্কাই করল না ।   ভাবলাম কালকের প্রসাদের কথাটা মনে করিয়ে দিই  কিন্তু  চাম্পু তো  আমার কথা শুনতেই চাই না ।
আমার খুব রাগ হল তাই  ওখানে  আর  দাঁড়ালাম না ।    দোকান করতে চলে গেলাম ।   দেরি করলে আবার  ওদিকে   মায়ের  বকা  খেতে হবে । 

        কালুয়ার সম্বন্ধে  কিছু  বলা দরকার  ।   কালুয়াদের আদি বাড়ি  বিহারের  ছাপড়ায় ।   এক অজানা কারনে কালুয়ার দাদা এবং  দাদি   বর্ধমানে চলে আসে  আর
তারপর এখানেই থেকে যায় ।   কালুয়ার দাদাজীর বয়স সত্তর পচাত্তর হবে ।  এই বয়সেও বুড়োটা রাজমিস্ত্রীর কাজ করে   আর  তাছাড়া কাজ না করলে খাবে কি । 
ওরা খুব গরীব ।   একটা ছোট্ট দুকামরার চালা ঘরে থাকে ।   একটু খানি  উঠোন আর তার এককোণে একটা মাটির চুলো, চুলোর পাশে দুখানা তাক  আর  তাকে  কৌটোর মধ্যে তেল, নুন, জিরা, ধনে ইত্যাদি । 
 বুড়ি ভালো চোখে দেখে না,  হয়ত ছানী পড়ার কারনে ।    বুড়ি   আবার  কানেও  খাটো  ।   সারাদিন ঘরেই থাকে,  খুব একটা বাইরে বেড়োয় না । 

আহারে !  আমার খুব মায়া হয় ওদের দেখে ।
 আমি মাঝেমধ্যে  কালুয়াদের ঘর যায় ।   বুড়ো বুড়ি আমার সাথে  গল্প করে,  হিন্দীতে কথা বলে ।   আমিও ভাঙা ভাঙা  হিন্দীতে  উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি,  খুব ভালো লাগে  ওদের সাথে কথা বলতে । 

     কাল  কালুয়াদের পূজো,  ওর  দাদি  অনেক কিছু বানায়  এদিন ।    সুজির হালুয়া,  ছোলার ডালের হালুয়া  আর  ঠেকুয়া  তো আছেই  তারওপর কত রকমের ফল  থাকে । 
আগের বছর  আমাকে ঠেকুয়া খাইয়েছিল ।   হেব্বি লেগেছিল  খেতে ।   আবার নারকেলের নাড়ু খাইয়েছিল ।   খুব ভালো কালুয়ার দাদি । 
এইবারও   নিশ্চয় করবে,  ঠিক করলাম  কাল সন্ধ্যেবেলায় অবশ্যই  যাবো ।   তাহলে  ঠেকুয়া পাবো । 
কিন্তু দাদুর শরীরটা কিছু দিন ধরে ভালো  যাচ্ছে না ।   গত পরশুদিন যখন  বিহারী গলিতে গিয়েছিলাম,  তখন কালুয়ার দাদি বলেছিল ।   দাদুর নাকি পেটটা  ঢিস্ হয়ে থাকে । 
 পেটটা  ঠিক মতো   ক্লিলায়  হচ্ছে না ।    প্রতিদিন সকাল সকাল দাদু  ধানকলে গিয়ে  প্রাতঃকর্মটা   সেরে ফেলেন   কিন্তু   ইদানিং  কয়েকদিন যাবৎ   দাদুর  প্রাতঃকর্মে  হঠাৎ  হঠাৎ  বিশ্রাম লেগে যাচ্ছে ।
 চারদিন ধরে পেটপুজো করার পর   সবে মাত্র একদিন কুটুম পাড় করে আসছেন ।   তাই পেটের অবস্থা সংকটজনক । 

ডাক্তারে তরল খাদ্য খেতে বলেছে ।   কিন্তু কত দিন তরলে চলবে, শুকনো না খেলে দাদুর যে চলে না ।    তিন দিন টানা তরল জাতীয় খাবার খেয়ে খেয়ে সহজ সরল দাদুর  সরলতা কোথায় যেন সরে পড়ল । 
 দাদু খিটখিটে হয়ে গেল ।   আবার যেই কে সেই ।   আবার সেই শুকনো খাবার,  ভাজাভুজি তেলের খাবার শুরু । 
ডাক্তার  বাধ্য হয়েই  শীঘ্র পেট খালি হবার ঔষুধ দিয়েছে ।   জোলাপ দিয়েছেন আর বলেছেন  বুড়োর খাবারে একটু খানি ঢেলে দিতে ।   বুড়ি আন্দাজে একটু করে ঢেলে দেয়  আর  বুড়ো দৌঁড়ায় ধানকলের
আকন্দ বনের ঝোপে । 

  দাদুর এই অবস্থা,   তাতে  কালুয়াদের বাড়িতে এখন নিশ্চয় হাতটান চলছে ।  এই অবস্থায় হালুয়া ঠেকুয়া করবে কিনা  কে জানে ।   এইদিকে আবার  চাম্পুও ঘ্যাম দেখাচ্ছে । 
 কাল আবার পুকুরঘাটে যাবে তো !
পড়ার বইটা খোলায় রইল আর মাথার মধ্যে এইসব চিন্তা ঘুরপাক খেতে লাগল ।   পড়ার বইয়ে  আর  মন বসল না ।   খুব ঘুম পাচ্ছিল তাই  বইপত্রসব গুটিয়ে   ঘুমোতে  চলে গেলাম । 

   একদম  ভোরের দিকে ঘুম ভেঙে গেল তাসাপার্টির বাজনা শুনে ।   একছুটে বিহারী গলিতে হাজির হলাম ।  দেখলাম ছয়জন লোক মিলে ছোটো বড়ো ড্রাম বাজাচ্ছে  আর একজন ব্যাঞ্জো বাজাচ্ছে ।
 বিহারী গলির লোক গুলো দাঁড়িয়ে দেখছে ।   কয়েকটা ছেলে মেয়ে নাচছে,  কালুয়াও  নাচছে । 
আরে,   চাম্পু না !
হ্যাঁ ঠিক দেখছি   চাম্পুই বটে !  চাম্পু নাচছে   নাকি  হাত পা  ছুড়ছে  বোঝা যাচ্ছে না ।   কালুয়া আর চাম্পু ঠিক যেন  তালে তাল মিলেয়ে  নাচছে । 
কিছুক্ষণ ওদের নাচ দেখে পরে  বাড়ী এসে খেয়ে দেয়ে  পড়তে বসে গেলাম ।   বিকেল বেলা শিবপুকুর যাবো ।   কিন্তু চাম্পুকে তো বলায় হল না !  তাহলে  কি হবে ?
চাম্পু যাবে তো নাকি !
নিশ্চয় যাবে,  এই  বলে  মনকে সায় দিলাম । 

     বিকেল হয়ে  এল,    পগার থেকে গান বাজনার শব্দ  আসতে লাগল,  এবার যাওয়া দরকার ।  কিন্তু চাম্পু কোথায় !  আমাকে ডাকতে এল না যে বড়ো !   এদিকে সময় তড়তড় করে বয়ে যাচ্ছে । 
এইবারে কি  ডাকতে আসবে না নাকি !    একাই চলে গেল না তো আবার !  কে জানে বাবা,   দুদিন ধরে ওর ব্যবহার টাও কেমন একটা কোণঘেঁষা কোণঘেঁষা  টাইপের হয়ে গেছে । 
আরে বিকেল তো গড়িয়ে চলল !   আর আসবে বলে তো মনে হচ্ছে না ।   না  না   আর দেরি করা যাবে না,  আমাকে একাই যেতে হবে দেখছি ।   চাম্পুর আশায় থাকলে চলবে না । 

     হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম মেলাতলায় ।   প্রচুর লোক এসেছে ,  যারা পূজো করতে এসেছে তারা পূজো করছে আর যারা মেলা দেখতে এসেছে তারা মেলা উপভোগ করছে । 
আমি  এদিক ওদিক ঘুরে ঘুরে আমাদের দলের ছেলেগুলোকে খুঁজতে লাগলাম ।  আর বিশেষ করে চাম্পুকে খুঁজছিলাম ।   কিন্তু হাজার হাজার লোকের ভিড়ে নির্দিষ্ট  কাওকে  খুঁজে বের করা খুব মুশকিল কাজ । 

    খোজাখুজি বন্ধ করে আমি ওদের পূজো দেখতে লাগলাম ।  দেখলাম   ভ্যানে করে   আবার    মাথায় করে   কত ঝুড়ি আসছে,   ঝুড়িতে নানা রকমের ফল,  কাঁন্দি কাঁন্দি   কলা,  নারকেল এবং  আরও কত কি !
কিন্তু চাম্পু কই ! চাম্পু না হলে প্রসাদ খায় কি করে !

   আবার চাম্পুকে খুঁজতে শুরু করে দিলাম ।    ভাবলাম এখনও হয়ত চাম্পু আসেনি,  এবার হয়ত আসবে ।   তাই  পাড়া থেকে মেলা  আসার  ম্যেন রাস্তার মুখে দাঁড়ালাম । 
এখান কিছুটা ফাঁকা,  লোকজন খুব কম ।   ওই  বড়ো  গুড়িওয়ালা গাছটার কাছে  কয়েকটা পাড়ার ছেলেকে কিছু   একটা করতে দেখে   সেদিকে এগিয়ে গেলাম,   যদি চাম্পু ওখানে থাকে  । 
  ওদের কাছে গিয়ে কালুয়াকে দেখতে পেলাম ।   কালুয়া আর বিহারী গলির কয়েকটা ছেলে পটকা, ব্যোমা  বাজী পোড়াচ্ছে । 
কালুয়া  আছে অথচ  চাম্পু নাই কেন !
    চাম্পুর তো থাকার কথা ।  দুদিন ধরে ওরা দুজন একসাথেই ঘুরছিল,   তবে এখন  কি হল । 

না  কালুয়াকে জিজ্ঞেস করে দেখি ।!  কালুয়াকে জিজ্ঞেস করাতেই  সে কেমন একটা  হূঁ  করল ।
 মুখ ভেঙ্চিয়ে বলল, " আমি কি জানি ।  "
আমি বললাম,   " তুই  জানবি না তো আর কে জানবে  রে ।    ও তো এখন তোর জিগরি দোস্ত ।  "
কালুয়া বলল, "  দোস্ত না ছাই !  "
 "কেন রে ভাই    কি হল ",  আমি বললাম । 
কালুয়া বলল,   " দাঁড়াতে বললাম  আর কোথায় পালিয়ে গেল ।   বললাম দাঁড়া   পটকা গুলো ভিতরের ঘরে  আমার ব্যাগে রাখা আছে  বের করে আনি ।  পটকা এনে দেখি ব্যাটা গায়েব  ।
 দুমিনিটও  দাঁড়াতে পারলো না ।   বলেছিল হাতের  মধ্যে ধানী পটকা  ফাটানোর  সময়  আমার পাশে থাকবে ।   আর এখন নিজেই গায়েব ।  "
" কাল তো দিব্যি  ফাটিয়েছিলি " ,  আমি বললাম ।
 কালুয়া বলল, "  কালকে চাম্পু আমার  হাত টা ধরেছিল তাই সাহস পেয়েছিলাম ।   তাছাড়া  পটকাটা কিভাবে ধরব  সেটাই তো  ভুলে গেছি ।   সকালে একবার ফাটিয়েছিলাম,  এখন আর মনে পড়ছে না । "
আমি বললাম,   " মনে পড়ার আবার কি আছে,  পটকার গোড়োটা ধর একটুখানি । "
কালুয়া বলল,  " তুই ফাটিয়ে দ্যাখা ।  "

    ব্যস্ ,   আমি আর কিছুই বললাম না ।   চুপচাপ কালুয়ার  অসহায় মুখটা দেখতে লাগলাম ।   কালুয়াদের পুজো  এবং  সে  পটকা বাজীও ফাটাচ্ছে,   তাসত্ত্বেও  কালুয়া  এত উদাস কেন । 
হাতের মধ্যে রেখে ধানী লঙ্কা ফাটাতে পারছেনা বলেই কি সে ঊদাস  নাকি চাম্পুর সাথে দোস্তী ভেঙে গেছে  বলে ।
 কালুয়া হয়ত চেয়েছিল হাতে করে ধানী  ফাটিয়ে  সবাইকে তাক লাগিয়ে দেবে,   সকলকে   বুঝিয়ে দেবে যে   ও ভীতু নয় ।    কিন্তু চাম্পু না থাকায় তার আর সাহসে কুলোচ্ছে না ।  তাছাড়া
ভুলাক্কার কালুয়া তো ভুলেই গেছে যে    কিভাবে হাতের মধ্যে ব্যোম ফাটাতে হয় । 
মনে মনে বললাম,  ব্যাটা   কালকে শিখল আর আজকেই  ভুলে গেল । 

  কিন্তু চাম্পুটা কোথায় গেল কে জানে ।   এখনই  সন্ধ্যে  হয়ে যাবে ।  সবাই চলে যাবে  মেলা শেষ হয়ে যাবে । 
ভাবলাম আজ বোধহয়  আর  ভগবানের প্রসাদ  খাওয়া হল  না । 
আর হল  ঠিক তাই ।   বেলা শেষ হয়ে গেল,  মেলাও শেষ  হয়ে গেল । 
 সব নিজের নিজের বাড়ী ভেগেছে ।   আজ  চাম্পুর ওপর খানিক রাগ হল,   কারণ  মেলাতলায়  সবাই  ইন্জয় করলো কিন্তু  চাম্পুর  অপেক্ষায়  আমার  সমস্ত  ইঞ্জয়  ভেস্তে গেল ।
তবু মনে একটা আশা রইল,  কালুয়ার সাথে  ওদের বাড়ি যাওয়া  যাক ।   ঠেকুয়া খেতে পাবো । 
কালুয়াকে বললাম, " কি রে  বাড়ী যাবি না । "
ও বলল, " দাঁড়া এই পটকাগুলো ফাটিয়ে  নিই   দিয়ে যাবো ।  "
আমি বললাম, " এ কালুয়া   বলছি যে   ঠেকুয়া খাওয়াবি তো ভাই ।  "
কালুয়া বলল, " দাদিকে বলবি দেখবি দেবে ।  "
আমি নিশ্চিত হলাম যে  কালুয়াদের   বাড়ীতে  তার মানে  হালুয়া ঠেকুয়া হয়েছে ।    কালুয়ার সাথে বাড়ি ফেরার জন্য  অপেক্ষা করতে লাগলাম । 

  শেষে সাড়ে ছটার   সময়  কালুয়াদের  বাড়ি  গেলাম ।   ওদের  বাড়ি গিয়ে দেখি   কালুয়ার দাদি  হিন্দীতে  নাকি ভোজপুরীতে   গলা খাকরাচ্ছে,  কপাল চাপড়াচ্ছে । 
কি ব্যাপার  তা  জানতে  ইচ্ছে করল ।  একটু পরে   কালুয়ার  দাদি নিজেই  বলে  উঠল, 
 " হামারা হালুয়া   কে  লি গেলি  রে ! 
 কৌন  হারামি  খাইলিলি  হামারা  হালুয়া রে  ! 
কালুয়াকে  দেখে ওর দাদি  গালাগাল দিতে লাগল ।   বলল,
 " ঘার মে কাহে নেহি  রাহেতা  রে কালমুহা !  দারওয়াজা কাহে খোল কে রাখে গেলি ।   কুত্তা ঘুষকে  হালুয়া লেকে  ভাগ গেলি । "
কালুয়ার মনে  পড়ল,    সত্যি তো   বেরিয়ে যাওয়ার আগে  সে দরজা লাগাতে ভুলে গেছিল ।
 ছিঃ  ছিঃ  বড্ড কাঁচা কাজ করে ফেলেছে  সে ।

নিজেকেই  বললাম,  কালুয়ার কাছ থেকে আর কি আশা করতে পারি ।   ব্যাটা ভুলাক্কারের  কিছুই মনে থাকে না । 
যাঃ  ঠেকুয়াটাও  বোধহয়  হাতছাড়া হয়ে গেল ।   নিজের  কপালের  উপর দোষারোপ করতে লাগলাম ।
  
  কিন্তু  আমার কপাল মোটেও   খারাপ ছিল না ।   কারণ  ঠেকুয়াও পেলাম,  নাড়ুও  খেলাম ।  কালুয়ার   দাদি  নিজে থেকেই  দিল । 
আঃ  কি টেস্টি  মাইরি !  কিন্তু  হালুয়াটাই পেলাম না ।   তাতে  কোনো প্রবলেম নেই,   ঠেকুয়া তো খেলাম । 
কালুয়ার  দাদু  বাড়ি ছিলনা,  ফিরে এসে দুর্ঘটনার  কথা  শুনে  খানিক  চেঁচামেচি করে  একদম চুপ করে গেল  আর  নরম  নাড়ু  চিবোতে লাগল  ।   শক্ত  ঠেকুয়া  চিবানোর  দাঁত  বহুদিন আগেই  খুইয়েছে ।
তবে ছোলার  ডালের নরম  হালুয়া  খেতে খুব ভালোবাসে বুড়ো ।   কিন্তু  বুড়োর ভাগ্যে  আজ  হালুয়া নাই  কারন হালুয়া গায়েব   হয়ে গেছে । 
কুকুর কি বেড়াল   ঢুকে হালুয়া খেয়ে গেছে ।  কিরকম  রাক্ষস কুকুরবেড়াল  যে  এক  খাঞ্চা  হালুয়া সাঁটিয়ে  দিল । 

 মিনিট খানেক পর   কালুয়ার দাদির  ক্ষীণ  আর্তনাদ  শুনতে পেলাম ।   ছোট্ট চালা মতো  রান্নাঘর  থেকে  বুড়ি  চেঁচাচ্ছে, 
" এ কালুয়া  ইধর  শুনত জারা ।   দেখতো বেটা  বো  জুলাবওয়ালা  বোতালওয়া কাঁহা হেঁ ।   মুঝে  দিখ  না  রাহী ।  "
কালুয়া একটা খালি কাঁচের বোতল  দাদিকে দিল ।  
কিন্তু  বোতল  খালি দেখে  দাদি  অবাক হয়ে গেল । 
বলল, " এ বোতল নেহি রে ।   দুসরি  বোতল  হোগা দেখ । "
কালুয়া  আরও একটা  বোতল  বুড়ির  হাতে দিয়ে বলল, "  আউর কোয়ি  বোতল  নাহি হ্যায় ।   "
বিস্মৃত  হয়ে  কালুয়ার দাদি   দ্বিতীয়  বোতল  থেকে কি   একটু  চেখে নিল ।   তারপর বলল,
" আরে ইঁ তো  শাহাদওয়া হ্যায় ।  "
এই বলে বুড়ি  আবার কপাল  চাপড়াতে  লাগল ।   বুঝলাম বুড়ি কিছু একটা  ভুল করেছে  যার জন্য  এরকম করছে ।
পরে  অবশ্য  জানতে পারলাম   বুড়ি   হালুয়াতে  মধু  দেওয়ার  বদলে  ভুল করে  জোলাপের  পুরো শিশিটাই  ঢেলে  দিয়েছে । 

  বুড়িও  যে  কালুয়ার  মতো ভুলাক্কার !   না  না   বয়স  হলে মানুষ  একটু আকটু  ভুল করে বসে  ।   যাক্ গে  ভালোই  হয়েছে ।  
ভাগ্যিস্  হালুয়া খাইনি ।   খেলে  কি যে  হত  তা  আর  জানতে কারও  বাকি নাই ।   ভালোই  হয়েছে  কুকুর বেড়ালে খেয়েছে । 
এবার  গিয়ে  ঠেলা বুঝবে  যখন  উন্মত্ত  পেট  নিচের দিকে ঠেলা দেবে । 
মনে মনে  হ্যাঃ  হ্যাঃ  করে  হেসে ফেললাম ।

   কালুয়াদের বাড়ি থেকে অনেক্ষণ  হল  চলে এসেছি ।   পাড়ার  বন্ধুদের সাথে  ঢিলো   খেলতে  লাগলাম ।    সবথেকে  অবাক হলাম যখন
এখানেও  চাম্পুকে  দেখতে  পেলাম না ।   চাম্পুই  তো আমাদের এই  ঢিলো   খেলার  প্রধান  আয়োজক ,   তবে  সে  কোথায় । 
 আমি  সবসময় চাম্পুর  দিকেই থাকি । 
ওর  সাথে থাকলে  ভয়ানক  জায়গাতেও  লুকোতে   আমার ভয় করে না ।   কিন্তু  এখন  তো  চাম্পু নাই,   তাহলে কোথায়  লুকানো যায় । 
  সানু   কুতুব  আর  আমি    ঠিক করলাম  ধানকলে গিয়ে   কোথাও লুকিয়ে  থাকব ।  

    ধানকলের দিকে  ছুটলাম  আমরা তিনজন ।   ধানকলে ঢোকার পথে   ওই  ভাঙা পাঁচিলটার দিকে তাকাতেই আমি  চমকে উঠলাম ।   ভাঙা  পাঁচিলটার   ওখানটা খুব  অন্ধকার
 আর সেই  অন্ধকারে  পাঁচিলটাতে  একটা কালো  মুর্তি  বসে আছে ।   আমাদের  দিকেই  তাকিয়ে রয়েছে মুর্তিটা ।   বাকিরাও দেখল  আর  সানু  তো  থরথর করে  কাঁপতে লাগল । 
আমার  বুকটা ধড়াক্ ধড়াক্ করতে  লাগল,   ভাবলাম ভুত নাকি !

  এমন  সময়  মুর্তিটা  ভীষণ চাপাস্বরে বলে  উঠল,
" তোরা এখানে কি করছিস রে কুতুব !  "
একি   ভুতটা  কুতুবকে  চেনে  দেখছি ।   খানিকক্ষণ পরে  আবার  কালো  মুর্তিটা  বলে উঠল,
 "তোরা ঢিলো খেলছিস নাকি রে !  আমিও  খেলব !"
আমার  গা টা  শিরশির করে উঠল ।   কিছুক্ষণ ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে গেলাম ।   কিন্তু  কিছুক্ষণের  মধ্যেই  দিশাহারা চিত্ত  দিশা ফিরে পেল  যখন  কুতুব বলল,
 "তুই  এখানে  কি করছিস  চাম্পু !  একা একা এই অন্ধকারে  বসে কি করছিস তুই ! "

চাম্পু !
 হ্যাঁ চাম্পুই  বটে ।  
কিন্তু চাম্পু এখানে কি করছে ।   মেলাতলায় গেল  না  আবার কালুয়াদের  বাড়িতে গিয়েও  পালিয়ে  গেল  ।   কি ব্যাপার কিচ্ছু  বুঝতে  পারছি  না । 
আর এখানেই  বা কি  করছে সে ।    কেন  জানিনা  ওর  উপর  একটু সন্দেহ  হল ।   আমি  চাম্পুকে  বললাম,
" তুই মেলা দেখতে  গেলি না কেন  রে !"
চাম্পু কিছুই  না  বলে  চুপ  করে থাকল ।
আমি  আরও  বললাম, " জানিস্  চাম্পু  কালুয়াদের  হালুয়া  কুকুরে  খেয়ে নিয়েছে আর..."
আমার কথা শেষ  না হতেই  চাম্পু  কেমন যেন  কুকুরের  মতো  ঘেঁউ  করে উঠল । 
সে বলল,  হ্যাঁও !  তুই কি জানিস রে ।  কুকুরে খেয়েছে  না ছাই !  হালুয়া  কালুয়াই  খেয়েছে !
এই  বলে  চাম্পু  পেট  ধরে  উঁহঃ  উঁহঃ  করতে  লাগল । 

    চাম্পু কেন  এমন  বলল যে  কালুয়াই  হালুয়া খেয়েছে ।   অথচ   সে  তো  নিজের  চোখে দেখেনি ।  
আমার  সন্দেহটা  আগেই   হয়েছিল   আর  সেটা  এখন সম্পূর্ণ  হল । 
  সমস্ত কিছু  আমার কাছে  জলের মতো  সাফ  হয়ে  গেল ।   কিন্তু  চাম্পু  ভাবছে  আমি  কিছুই জানি  না ।  

   কিন্তু  আমি জানি  যে,   চাম্পু কেন  আজ  মেলাতলায় যায় নি ।   আমি  জানি,    কেন সে  কালুয়ার  সাথে   মিলঝোলটা  এত  বাড়িয়েছিল ।
 কি কারণে  চাম্পু  এই সাঁঝের  বেলায়   ধানকলে   অন্ধকারে  পাঁচিলে  বসে  আছে,  সেটাও  আমি  জানি ।  
যেই ধানকলে  আমরা  রোজ  সকালে আর বিকেলে  পেট  খালি করতে  আসি    হাল্কা হতে  আসি   সেখানে  চাম্পু  অবেলায়  কি কারনে,     তাও  জানি  । 
  এবং  এও  জানি,    কেনই  বা  চাম্পু  পেটটাকে চেপে ধরে  উঁহঃ  উঁহঃ   করছে । 

কুকুরে হালুয়া খেয়েছে বলাতে,   কথাটা  নির্ঘাত  চাম্পুর   গায়ে  লেগেছে ।   জোলাপ  দেওয়া  হালুয়া খেয়ে  চাম্পুরই  হালুয়া  টাইট  হয়ে গেছে  গ্যারান্টির  সাথে বলতে পারি । 
আর  তা  হাড়ে হাড়ে  টের পাচ্ছে  ব্যাটা ।   জীবনে  আর কোনো দিন  হালুয়া  খাবে  বলে তো  মনে হয় না । 


  আমি নিজের  মনে বললাম,   ব্যাটা  নিজে  খাবে,  নিজে চুরি করবে    আর   লোকের  দোষ দেবে  ।   একদম ঠিক হয়েছে!   বেশ  হয়েছে  !  খাসা হয়েছে !
 আবার  বলে  কিনা,    হালুয়া  খেয়েছে  কালুয়া  । ।


 সমাপ্ত 


Written By :-  Aalim Khan

এখানে ক্লিক করে  আমার  ফেসবুক প্রোফাইলে  ঘুরে  আসতে পারেন ।

 
Copyrighted.com Registered & Protected

No comments:

Post a Comment