বাংলা গল্পসল্প

"BanglaGolpoSolpo" is all about Bengali stories, Bengali Poems, Articles etc. 'বাংলা গল্পসল্প'র তরফ থেকে সকল পাঠকগণ, শ্রোতাগণ ও লেখকবন্ধুদের জানাই হার্দিক অভিনন্দন, ভালোবাসা, প্রীতি ও শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা। এই অনলাইন পাবলিশিং ওয়েবসাইটটির অনবদ্য প্রচেষ্টা স্বরূপ বিভিন্ন ধরনের বাংলা সাহিত্যের উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলা জগতের গর্বিত বাঙালীর সন্নিকটে নবাগত তরুণ প্রজন্মের সাহিত্যিকগণের আত্মপ্রকাশ করার নিতান্তই একটি প্রয়াসমাত্র ।

Wikipedia

Search results

Pageviews

নিচের follow button টির দ্বারা আপনি এই ওয়েবসাইট টি follow করতে পারেন ।

Thursday, 11 January 2018

ছেলেধরা / ঝন্টু ও ঝঞ্ঝাট' সিরিজের গল্প / ছোটোদের গল্প / শিশুসাহিত্য

                                                              Painted by : Aalim Khan














ছেলেধরা

        ঝন্টু ও পটা   দুই বন্ধু ।     প্রতিদিন তারা একসাথে স্কুলে যায়  এবং   একসাথেই বাড়ী ফেরে ।   আর ফেরার পথে  গল্প করতে করতে   এমনভাবে  গল্পের   কল্পজগতে  প্রবেশ করে   তাতে   মাত্র দশ  মিনিটের হাঁটা পথ   আধঘন্টাতেও শেষ হয় না ।

       সেদিনও  তারা গল্প  করতে করতে বাড়ী ফিরছিল ।    রাস্তায় চলতে চলতে  পটা  ঝন্টুকে হাঁটার বিভিন্ন রকমের  ক্যালি ক্যালমা আর কেরামতি   দেখাতে লাগল   আর  নিজে নিজেই  খ্যাঁকখ্যাঁক করে হাসতে থাকল ।     আর তা দেখে   ঝন্টুও    দাঁতে  দাঁত চেপে  ফিকফিক করে হাসতে লাগল ।

          এভাবে  পথ  চলতে  চলতে    কিছুক্ষণ পরে   তারা  একটা তেমাথা মোড়ে হাজির হল ।    কড়া দুপুর,   রাস্তা  ফাঁকা,   একেবারে খাঁ খাঁ করছে ।    কোথাও কারোও দেখা নেই ।   প্রায় সব দোকান বন্ধ ।    অনতিদূরে কেবলমাত্র  একটা  মুদিখানার দোকান খোলা রয়েছে    কিন্তু   দোকানে  মুদির কোনো হদিস নাই ।    ঠিক এমন সময় ঝন্টু আঙুল দিয়ে ইশারা করে   পটাকে
  কি যেন  একটা দেখানোর চেষ্টা করল ।    কিন্তু  পটা  তখনও  তার  নাট্য-শিল্প-কলায়  ব্যস্ত ।

         ঝন্টু যা দেখাতে চাইলো এবং পটা যা দেখল    তা ঠিক এইরকম :
 জীর্ণ-নোংরা পোষাক পরা  একটা লোক  রাস্তার ধারে   একটা বকুল গাছের ছাওয়ায় বসে আছে ।    আর সেই লোকটার পাশে রয়েছে  একটা বড়ো রকমের বস্তা ।   ওই বস্তার  অনেক জায়গায় ছেঁড়া  এবং   সেই ছেঁড়া জায়গাগুলো  ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো দিয়ে রিপু করা ।
লোকটার গায়ে একটা ময়লা  লাল রঙের  হাফহাতা ঢিলেঢালা  জামা,  একটা ফুলপ্যান্ট  আর  সেটাও অত্যন্ত নোংরা, প্যান্টের একটা ভাগ  অর্ধেকটা উপরের দিকে গোটানো ।   জামার পকেটটা অর্ধেক ছেঁড়া আর   সেটা সাপের ফণার মতো দুলছে ।    জট পাকানো বড় বড় চুল,  ঘন গোঁফ,  আর  চুটুক দাঁড়িতে অদ্ভুদ রকম দেখাচ্ছে লোকটাকে।    গোটা মুখে  ময়লা বসে গেছে  তাই যতটা না কালো   তার থেকেও বেশি কালো দেখাচ্ছে,   তবে দাঁতগুলো একদম  চকচকে সাদা     যা  দেখে  পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে যে   কয়েকমাস ধরে স্নান না করলেও  লোকটা  রেগুলার দাঁত মাজে   বটে ।

       ঝন্টু ও পটা  এতক্ষণ এসব লক্ষ্য করছিল ।    এমন সময় হঠাৎ লোকটা ওদের দিকে তাকালো ।    বিস্ফারিত অক্ষিকোটরের মধ্যে আমড়ার আঁটির মতো তাঁর চোখ দুটো   জ্বলজ্বল করতে লাগলো ।

     ঐ রাস্তার মোড়ে ঝন্টু,  পটা আর  ওই  বিদঘুটে লোকটা ছাড়া আর কেউ ছিল না ।  লোকটা এক দৃষ্টিতে ওদের দুজনকেই দেখতে থাকলো ।    ঝন্টু   ভয় পেয়ে পটার জামাটা টেনে বলল, " ঐ লোকটাকে দেখে তোর কি মনে হচ্ছে রে  পটা ! "
  পটা মৃদুকম্পিত স্বরে ধীরে ধীরে বলল,  " ওটা কোনো ছেলেধরা  না তো আবার  ! "

             "ছেলেধরা"... এই শব্দ টা শোনা মাত্র  ঝন্টুর পুরো শরীরটা  শিরশির করে উঠল ।   তার   হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত  কেমন যেন অবশ হয়ে এল ।    কারণ ঠিক  আগের দিন রাতে   খাবার ঘরে ঝন্টুর মা      এই ছেলেধরা নিয়ে অনেক কথাই বলেছিল   আর ঝন্টু  তা মন দিয়ে শুনেছে ।    ঝন্টুর মা বলেছে   এই ছেলেধরা গুলো  নাকি  গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড সক্রিয় হয়ে পড়ে  কারণ  গ্রীষ্মের  প্রচন্ড দাবদহে
লোকজন খুব একটা   বাইরে  বেরোয় না ।    রাস্তাঘাট একদম ফাঁকা থাকে বললেই চলে ।    আর ঠিক  এই সময়টাই হল ছেলেধরাদের কাছে সুবর্ণ সুযোগ,   এই সুযোগ তারা সচরাচর হাতছাড়া   করতে চাই না ।   তাদের  কাছে  একটা বড় বস্তা থাকে  আর  ছোটো ছোটো  ছেলেমেয়েদের  কিসব খাইয়ে দিয়ে   অজ্ঞান করে সেই বস্তার ভিতরে ভরে নেয়,   তারপর অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে বিক্রী করে দেয় ।    এটাই ওদের ব্যবসা ।

            ঝন্টু এতক্ষণ অন্যমনস্ক হয়ে   তার মায়ের বলা  কথাগুলো ভালছিল ।    হঠাৎ  পটা   ঝন্টুকে কনুইয়ের গুঁতো মারল ।   ঝন্টু একটু কেঁপে উঠল ।   আজ  তারা   ছেলেধরার খোপ্পরে পড়েছে   ভেবে  দুজনাই ভয়ে অসাড় হয়ে গেল ।   কি করবে তা  বুঝে উঠতে পারল না ।    আর এদিকে   সেই লোকটাও  তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একভাবে ঝন্টু ও পটার দিকেই  তাকিয়ে রয়েছে ।    এমন সময় লোকটা দাঁত বের করে মাথাটা ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে হাসতে লাগল     কিন্তু অদ্ভুদ ব্যাপার  মুখ থেকে হাসির কোনো শব্দই শোনা গেল না ।  এই ধরণের হাসিকে নাকি শয়তানি হাসি বলা হয় ।   শয়তান লোকেরা  তাদের দুষ্কর্মের  চরম পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ঠিক   এই রকমই হেসে থাকে ।    আর এই হাসিটা  কিন্তু ঝন্টু এবং পটার মোটেই পছন্দ হল না ।

        পটা  ভীতিকম্পিত হয়ে ভাঁঙা ভাঁঙা কন্ঠস্বরে বলল,  " পালিয়ে  চ  রে  ঝন্টু !   ও  এবার আমাদেরকেই ধরবে   আর ঐ  বস্তার মধ্যে ভরবে ।!  দেখছিস না কত বড় বস্তা ।!
 মনে হচ্ছে  আরও অনেক  ছেলেদের ধরে ওই বস্তায় ভরে রেখেছে,   এবার মনে হয়   আমাদের পালা । "

      ঝন্টু একভাবে লোকটাকে দেখছে কিন্তু  তার কান দুটো  পটার দিকে ।    ঝন্টু কিছুই বলল না ।   ওর গলা শুকিয়ে গেছে   কথা বলতে চাইলেও   বলতে পারছে না ।
   ঠিক  তখনই   লোকটা  উঠে দাঁড়াল ।    কিন্তু কেন ?

      মুহুর্তের মধ্যে পটা বলে উঠল,  " ঝন্টু পালা ... !"
এই বলে   পটা  সটান দৌড় দিল ।   ঝন্টুর  হুঁস ফিরল   আর   কোনো কিছু ভাববার আগেই   আপনাআপনিই সে দৌড়তে লাগল পটার পিছন পিছন ।   কাঁধের স্কুল ব্যাগ খুব ভারি,  অত ভারি ব্যাগ নিয়ে ভালো দৌড়নো যায় না ।    ঝন্টু দেখল  পটা  পিঠের দিকে  হাত বাঁকিয়ে  তার ব্যাগটাকে  চেপে ধরে দৌড়চ্ছে ।    পটার দেখাদেখি  ঝন্টুও ওই   একই  পন্থা অবলম্বন করল ।    দুজনাই প্রাণপণে দৌড়তে লাগল ।

        ঝন্টু   একবার পিছন দিকে তাকালো  আর    তাকানো মাত্র  তাঁর  ভয়  দ্বিগুণ  বেড়ে গেল ।    কারণ ঐ লোকটাও  তাদের পিছনে দৌড়চ্ছে ।   ঝন্টুর বুকটা  ঢিপ্ ঢিপ্ করতে লাগলো,  দৌড়নোর কারণে নয়   ছেলেধরার ভয়ে ।    ছেলেধরা তাঁকে  ধরবে আর   বস্তায় ভরবে,   কেউ জানতেও পারবে না ।


          আজ ঝন্টুকে নিজের প্রাণটা বাঁচাতেই হবে ।  কিন্তু  পিঠে ভারী ব্যাগের বোঝা নিয়ে দৌড়োনো অসহ্য হয়ে উঠেছে ।   কিন্তু  এদিকে পটা দিব্যি দৌড়চ্ছে ।    ঝন্টু কখনই পটাকে পেরে ওঠে না ,  কারণ পটা   স্কুলের বেষ্ট রানার ।
দৌড়নোয়  পটাকে হারানো  ঝন্টুর ক্ষমতার বাইরে ।   তবুও  ঝন্টু আপ্রাণ চেষ্টা করছে  কারণ আজ জীবণমরণের লড়াই ।
 পটাকে হারাতে না পারলেও  এই ছেলেধরাকে হারাতেই হবে ।


       দৌড়ে দৌড়ে ঝন্টু   প্রায়  হাঁপিয়ে গেছে    কিন্তু  তখনও  ছেলেধরাটা  একতালে  ওদের পিছনে দৌড়চ্ছে ।   অতভারী একটা বস্তা নিয়ে   ছেলেধরাটা কিভাবে একনাগাড়ে  এতজোড়ে  দৌড়চ্ছে    তা কিছুতেই ঝন্টু বুঝে উঠতে পারছে না ।    সেই বিশাল বস্তার ভিতরে  নাই নাই করে  একজোড়া ছেলে তো  থাকবেই ।    তা সত্ত্বেও লোকটার দৌড়নোর গতিবেগ বাড়ছে   তবু কমছে না ।    কী অসীম ক্ষমতা ছেলেধরার !


         লম্বা লম্বা ঠ্যাং দুটো নিয়ে  উটপাখির মতো দৌড়চ্ছে ।    এক এক লাফে দশ ফুটেরও বেশি হবে  তো কম হবে না ।    তার ওপর পিঠে অত ভারী বস্তা ।    এমন সময় ঝন্টু  আরো  একবার পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখল ।  একি !   ছেলেধরা   ঠিক যেন  তার   দুই তিন হাত দূরেই । 

            ঝন্টু ক্ষণিকের জন্য  ভাবতে লাগলো  " এই  বুঝি   তাকে খপাৎ করে ধরে ফেলবে   আর   তারপর  পটাকেও ধরবে ।    পটাটাও  নিস্তার পাবে না ।     আমাকে হারাতে পারলেও  পটা আজ এই   ছেলেধরার হাত থেকে পার পাবে না । "


        ফাঁকা রাস্তায় তিনজনা দৌড়চ্ছে ।   রাস্তা কিছুতেই শেষ হতে চাই না ।  সরার আগে পটা   তারপর ঝন্টু    আর সবার শেষে ছেলেধরা ।      এমনি করে দৌড়তে দৌড়তে   হঠাৎ   ছেলেধরা  ঝন্টুকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেলো ।
একি !  ছেলেধরা  ঝন্টুকে ধরল না কেন !  ঝন্টু কিছুতেই বুঝে উঠতে পারল না  এমন টা   কেন করল ওই ছেলেধরাটা ।  তাহলে কি সে পটাকে ধরতে চাই,  ওকে বস্তায় ভরতে চাই ।    ঝন্টু অবাক হয়ে গেল ।

        তবুও  ঝন্টু দৌড়তে থাকল ।    এখন ছেলেধরা পটার পিছনে দৌড়চ্ছে  ।   এই বুঝি  পটাকে  ধরল ধরল  বলে ।   পটা   প্রচন্ড বেগে দৌড়চ্ছে,    সে কিছুতেই ছেলেধরার হাতে ধরা দেবে না ।   পটা  পিছনে তাকাতেই দেখল   ছেলেধরা একেবারে তার পিছনেই ।   ঝন্টু কোথায় ?
  ঝন্টুকে না দেখতে পাওয়ায়   পটার উদ্বেগ  আরও বেড়ে গেল ।    পটা  ভাবতে লাগল,     ছেলেধরাটা নিশ্চয় ঝন্টুকে বস্তায় পুরেছে  এবার তাকেও পুরবে !
  পটা আর পিছনে দেখল না সে আরও জোরে দৌড়তে লাগল ।

     কিন্তু পটাও ছেলেধরাকে পেরে উঠল না ।   মুহুর্তের মধ্যে ছেলেধরাটা পটাকে  পিছনে ফেলে  এগিয়ে গেল ।
 পটাও   অবাক হয়ে ভাবতে লাগল   কেন ছেলেধরা তাকে ধরল না ।    ঠিক এমন সময় পিছন থেকে  ঝন্টু বলে উঠল,   " পটা দাঁড়া ।!   দাঁড়া পটা ! "


   পটা  ঝন্টুকে দেখতে পেল ।    দুজনায় দাঁড়িয়ে গেল ।   ব্যাপার টা  ঠিক কি ঘটল তা ভাবতে না ভাবতেই তারা  একরকম ভয়ঙ্কর গুরুগম্ভীর শব্দ শুনতে পেল ।   আর শব্দটা হল একদল কুকুরের,     ঘেঁউ ঘেঁউ করতে করতে তাদের দিকেই দৌঁড়ে আসছে ।    ঝন্টু ভালো করে দেখল  কুকুর গুলোর মধ্যে এক দুটো তার চেনা ।    তাদের মধ্যে  পটার প্রিয় কুকুর   শাহেন্সাও  রয়েছে ।     ঝন্টু মনে মনে ভাবল  উপরওয়ালা তাদের রক্ষার জন্য   এই কুকুর গুলোকে পাঠিয়েছেন,    আজ ছেলেধরার লক্ষ্য পূরণ হবে না  ।


    ছেলেধরাও আর বেশিক্ষণ দৌড়তে পারল না ।   সামনে একটা পোড়ো প্রাচীর দেখতে পেয়ে  ঝটপট তাতে উঠে পরল   আর  ভয়ঙ্করভাবে হাঁপাতে লাগল  ।   এক নিমেষে কুকুর গুলো   ছেলেধরার কাছে পৌঁছে গেলো   আর   বিকটভাবে ঘেউ ঘেউ করতে লাগল   কিন্তু   ছেলেধরা পর্যন্ত পৌঁছতে না পারায় শ্যাওলা পরা দেওয়ালে  পায়ের নখ দিয়ে আঁচড় কাটতে লাগল ।    ছেলেধরার অবস্থা একেবারে নাজেহাল,  নিজের প্রাণ বাঁচাতেই সে ব্যস্ত ।   বস্তাটা মাটিতে ফেলে দিয়ে সে জোরে জোরে হাঁপাতে লাগল ।

   তৎক্ষণে  কুকুরগুলো বস্তা নিয়ে ছেঁড়াছেঁড়ি শুরু করে দিয়েছে ।  চারিদিক থেকে বস্তাটাকে  কুকুরগুলো  যে  যার নিজের  দিকে টানাটানি শুরু করে দিল ।   বস্তাটা খুব শক্তপোক্ত তবে কুকুরের দাঁতের  চাইতে শক্ত নয় ।    প্রচন্ড টানা হ্যাঁচড়াতে   বস্তা ছিঁড়ে খান্ খান্  হয়ে গেল ।     ঝন্টু ও পটা   দাঁড়িয়ে  দাঁড়িয়ে  এসব  কান্ডকারখানা   দেখতে লাগল ।

    ঝন্টু ভাবতে লাগল,    এবার নিশ্চয়  ওই ছেলেধরার   সব দুষ্টচক্রের পর্দা   ফাঁস হয়ে যাবে ।    বস্তার ভিতরে থাকা ছেলেগুলো  এবার মুক্তি পাবে   আর ছেলেধরারও উপযুক্ত শাস্তি হবে  ।    কুকুরগুলো মিলে  আচ্ছা শায়েস্তা করেছে ওই ছেলেধরাকে ।   ছেলেধরার পুরো বারোটা বেজে গেছে ।   এতসব ভাবতে ভাবতে ঝন্টু বেখেয়ালি হয়ে পড়ল ।

  এমন সময়   পটা  ঝন্টুর ব্যাগটা  ধরে টানতে লাগল ।    এমন টা করাতে  ঝন্টু  ভয়ঙ্করভাবে চমকে উঠল ।     ঝন্টু  দেখল,  সে যা ভেবেছিল   যেমনটা সে আশা করেছিল  আসলে তেমনটা নয় ।   বস্তায় ছেলে নেই   বস্তায়  আছে  শুধু নোংরা  কাগজ , প্লাস্টিক,   পলিথিন আরও কত কি ।   ঝন্টু খামকায় যতসব উল্টোপাল্টা ভেবে বসে ।
    এতো কোনো ছেলেধরা নয়  , এ আসলে কাগজ কুরোনী ।   ভয় জিনিসটা ঝন্টুর গা থেকে একেবারে উতড়ে  গেল ।   মুচকিয়ে মুচকিয়ে হাসতে লাগল ঝন্টু ।

       ঝন্টুকে এভাবে হাসতে দেখে পটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল, " হাসিস না রে ঝন্টু ! একটা কথা বলি শোন তবে,  মনে রাখিস  ছেলেধরাদের একটা স্পেশাল পাওয়ার থাকে ।    ওরা ম্যাজিক জানে,   ওরা জাদুকর ।    জাদু  করে  অনেক কিছু  উলোট্ পালট্  করে দিতে পারে ।    হয়ত  বস্তার ছেলেগুলোকে  ম্যাজিক করে  হাপিস করে দিয়েছে  আর তার জায়গায় নোংরা কাগজ,  চিকচিকি,   আবর্জনা ভরে দিয়েছে    যাতে কেউ বুঝতে না পারে   যে   ও     একটা ছেলেধরা ।  "

   পটার এই কথাগুলো  ঝন্টুর একদম ভালো লাগল না,  তাঁর  প্রসন্ন  চিত্ত   বিষন্নে  পরিণত হল  ।    মুখের হাসি কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল ।     ঝন্টুর  পা থেকে  মাথা  পর্যন্ত  শিড়দাঁড়া বেয়ে একটা গভীর   শিহরণ  উঠে এল ।   ঝন্টুর  হাঁটু  দুটো কাঁপতে লাগল ।
    ঠিক এমন সময় পটা চাপা গলায় বলে  উঠল, " ঝন্টু পালা ! "

           এই বলেই পটা  বাড়ীর দিকে দৌড়তে লাগল ।   আর  পিছন পিছন  ঝন্টুও দৌড় দিল ।
    এই বার কিন্তু  ঝন্টু  আর পিছন ফিরে তাকালো না ।
  সামনের  দিক থেকে    একটা শ্লোগান ঝন্টুর কানে   ভেসে আসতে লাগল ।
 দৌড়তে দৌড়তে   পটা   এক নাগাড়ে এই শ্লোগান দিয়ে চলল -     " ভাগ্ ঝন্টু ভাগ্ !   ভাগ্ ঝন্টু ভাগ্ !  "



                                                                                                                           By:   Aalim Khan

No comments:

Post a Comment