বাংলা গল্পসল্প

"BanglaGolpoSolpo" is all about Bengali stories, Bengali Poems, Articles etc. 'বাংলা গল্পসল্প'র তরফ থেকে সকল পাঠকগণ, শ্রোতাগণ ও লেখকবন্ধুদের জানাই হার্দিক অভিনন্দন, ভালোবাসা, প্রীতি ও শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা। এই অনলাইন পাবলিশিং ওয়েবসাইটটির অনবদ্য প্রচেষ্টা স্বরূপ বিভিন্ন ধরনের বাংলা সাহিত্যের উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলা জগতের গর্বিত বাঙালীর সন্নিকটে নবাগত তরুণ প্রজন্মের সাহিত্যিকগণের আত্মপ্রকাশ করার নিতান্তই একটি প্রয়াসমাত্র ।

Wikipedia

Search results

Pageviews

নিচের follow button টির দ্বারা আপনি এই ওয়েবসাইট টি follow করতে পারেন ।

Friday, 11 September 2020

শ্যামলের কীর্তিলাভ / বাংলা গল্পসল্প নিবেদিত ছোট্ট একটি গল্প ।

 


 শ্যামলের কীর্তিলাভ

 'মহঃ আজহার'

            কয়েক বছর আগের কথা। গ্রামের এক নির্জন পরিবেশে মানুষ শ্যামল কিশোর চক্রবর্তী। এমনিতে খুব শান্ত বীর্য ও বুদ্ধিমান বলেই পরিচিত গ্রামের মানুষদের কাছে, তবে স্বভাবে প্রচন্ড একগুঁয়ে। পড়াশোনায় শ্যামল অতীব মেধাবী ও ধুরন্ধর। ছোটো থেকেই তার লক্ষ্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। শহরে গিয়ে মন দিয়ে পড়াশোনা করে বড়ো বড়ো ডিগ্রি অর্জন করে ভালো কোনো চাকরি অর্জন করাই শ্যামলের একমাত্র লক্ষ্য। তবে শ্যামলের পরিবারের একমাত্র উপার্জন করেন শ্যামলের বাবা উপেন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী। শহরের একটি জামাকাপড়ের নামী দোকানে তিনি একজন সৎ, নিষ্ঠাবান কর্মচারী। মাসিক বেতন পান সাত হাজার টাকা আর তা দিয়েই সংসার চালান বহু কষ্টে। একমাত্র ছেলের লেখাপড়ার খরচ আর পাশাপাশি ডাক্তার ঔষধপত্র তো রয়েছেই। খুব কষ্ট করে ভগবানের কৃপায় উপেন্দ্রবাবুর চলে যায়। তবে শ্যামল পড়াশোনার সাথে সাথে টিউশন পড়িয়ে কিছুটা  হলেও সংসার চালাতে বাবা মাকে সাহায্য করত।
           শ্যামল অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে মেধার দ্বারা দশম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলে সর্ব্বোচ নম্বর নিয়ে পাশ করে স্কুলের মুখ উজ্জ্বল করে। স্কুলের মাষ্টার মশাইয়েরা আলোচনা করে শহরের নামী কলেজে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। স্থির হয় যাবতীয় খরচাদি স্কুল থেকেই বহন করা হবে শিক্ষকদের মিলিত প্রচেষ্টায়।
          সমস্ত শিক্ষকের মিলিত প্রচেষ্টায় শ্যামল বর্ধমান শহরে রাজ কলেজে সংস্কৃত বিভাগে অনার্স নিয়ে ভর্তি হয়। তারপর মন দিয়ে পড়াশোনা শুরু করে দেয়। শ্যামলের জন্য গ্রামের শিক্ষকেরা বর্ধমানের একটি হোস্টেলে থাকারও ব্যবস্থা করে দেন। শ্যামল মাষ্টারমশাইদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে শেষমেষ নিজের লড়াই শুরু করে দেয়। যথারীতি সংস্কৃত অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে দেখায়। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে সংস্কৃত বিভাগ তার রেজাল্টে ব্যাপকভাবে আপ্লুত হয়।
         তারা বিগত কয়েক বছরে শ্যামলের মতো আর কাউকে সেভাবে ভালো প্রকাশ করতে দেখেননি। ঠিক তার পরেই রেগুলার থেকে সংস্কৃৃতে মাষ্টার অফ আর্টস নিয়ে শ্যামল ভর্তি হয় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। মাষ্টার ডিগ্রিতেও পড়াশোনা চলতে থাকে জোরকদমে। এদিকে শ্যামলের গ্রামের লোকেরা ভীষণভাবে খুশি এবং মাষ্টার মশাইয়েরাও আপ্লুত। মাষ্টার ডিগ্রিতেও রেজাল্টে তাক লাগিয়ে দেয় শ্যামল। এই রেজাল্ট দেখে ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকরাও তার মেধার প্রশংসা করেন। নিতান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা শ্যামলকে এক উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেয়।
         তারপর সে  বি.এড. করে। এতেও উত্তম রেজাল্ট আসে, কীর্তি ও মেধাবী ছাত্রের শিরোপা পায়। তারপর এস.এস.সি পরীক্ষায় বসে ফার্স্ট চান্সেই সাফল্য অর্জন করে। বর্ধমান জেলার একটি হাই স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়। এখানেই সে থেমে থাকেনি । এরপর সংস্কৃতে পি.এইচডি. করে ডক্টরেট উপাধি লাভ করে। তারপর নেট-সেট পরীক্ষায় পাশ করে বর্ধমান জেলার একটি নাম করা কলেজে সংস্কৃত বিভাগে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত হয়।
          শ্যামল এই সাফল্যের জন্য তার সেই গ্রামের মাষ্টার মশাইদের এবং মা বাবাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে এতটুকুও বিলম্ব করেনি। শ্যামলের কথায় তার জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যারা তার লড়াইয়ে প্রধান সঙ্গী হয়ে থেকেছেন তারা হলেন তার গ্রামের স্কুলের শিক্ষকগণ। আর সবসময় পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন তার বাবা মা। আর সেই কারণেই সে এক বড়ো মাপের দক্ষ এবং আদর্শ শিক্ষক-অধ্যাপক হিসেবে কীর্তিলাভ করতে পেরেছে ।।

 

 

 

 

Written By- MD. AZHAR


Copyrighted.com Registered & Protected

 

No comments:

Post a Comment