" কুলের আঁটি "
বাড়ির জানালা দিয়ে ঝন্টুকে পটা সাড়া দিল, “ কি রে ঝন্টু খেলতে যাবি না ?
“একটু পরেই যাচ্ছি”- এই বলে ঝন্টু ফুরুৎ করে ওই ঘরে চলে গেল । আর পটা ব্যাট হাতে নিয়ে মেডিকেল মাঠের দিকে রওনা হল ।
মাঠে পৌঁছতে ঝন্টুর খুব বেশি দেরি হল না, খুব বেশি হলে ১৫ মিনিট লেট হবে । আর এর মধ্যেই ঝন্টু মাঠে পৌঁছে দেখল পটা মাঠে নেই, কামরান নেই, মিলন নেই, এমনকি কেউই নেই ।
মাঠ একেবারে ফাঁকা । দুপুর আড়াইটা হবে । কেউ নেই তার মানে পটারা এখনও মাঠেই আসেনি বোধহয় । কিন্তু অনেকক্ষণ আগেই তো পটা হাঁক দিয়ে গেছে । তবে ওরা মাঠে না এসে গেল কোথায় সব ?
এইসব ভাবতে ভাবতে মাঠের পশ্চিমদিকের কোণটাই যেখানে বিল্ডিংয়ের ছাওয়া পড়েছে ; যেখানে ঝন্টুরা রোজ শর্টবাউন্ডারি খেলে ; ঠিক সেইদিকটাই তাকাতেই ঝন্টু দেখল, ইঁট সাজিয়ে উইকেট করা রয়েছে ।
তার মানে নিশ্চয় পটারা এসেছে । তবে কোথায় গেল ওরা ? এই ভেবে ঝন্টু চিন্তায় পড়ে গেল । বাউন্ডারির ভিতরে বসে অপেক্ষা করতে লাগল ঝন্টু । কোনো দরকারি কাজে হয়ত গেছে কোথাও ?
তাছাড়া একটা 'প্লাস্টিক বল' কেনার কথা ছিল ! সেটাই কিনতে যায়নি তো আবার ? দুপুরবেলায় দোকান টোকান খোলা থাকবে তো ?
ঝন্টুর রাগ হল পটার উপর । চুপচাপ বসে বসে কুড়িয়ে পাওয়া একটা ব্লেড নিয়ে ঝন্টু বনকচুর ডাঁটা কেটে এনে সবজি বানানোর মতো কুচিকুচি করতে লাগল । অনেকটা সময় কেটে গেল ।
ঝন্টুর ধৈর্য্যের বাঁধ প্রায় ভেঙেই পড়েছিল ঠিক এমন সময় পটার গলা পেল । ঝন্টু তাকিয়ে দেখল পটা, মিলন, কামরান আর শ্যামল হেঁটে হেঁটে তার দিকেই আসছে ।
ঝন্টুর কাছে এসে পটা বলল, “এত দেরি করলি কেন ? একটু আগে যদি আসতিস্ তবে আমাদের সাথে যেতিস্ !”
ঝন্টু গোমড়ামুখে বলল, “আমার জন্য খানিকক্ষণ দাঁড়াতে পারলি না !“
পটা ধপ্ করে ঝন্টুর কাছে বসে পড়ল । চোখে ইশারা করে পটা তার পকেটের দিকে ঝন্টুকে তাকাতে বলল ।
- "বলতো ঝন্টু আমার পকেটে কি এগুলো ?" পটা প্রশ্ন করল । পটার দেখাদেখি কামরান, মিলন, আর শ্যামলও বসে পড়ল আর একদৃষ্টিতে ওরা ঝন্টুর দিকে তাকিয়ে রইল । পটা ঝন্টুকে একটা প্রশ্ন করেছে ।
সেই প্রশ্নের উত্তর ঝন্টুকে দিতেই হবে ।
ঝন্টু পটার প্যান্টের দিকে একভাবে তাকিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে লাগল । কি আছে পটার দুই পকেটে তা ভাবতে লাগল । ঝন্টু দেখল পটার দুই পকেট ফুলে ঢোল হয়ে রয়েছে । তাহলে কি সত্যিই বল কিনে এনেছে নাকি ?
কিন্তু দুটো বল কিনেছে কেন ? একটা বলই তো কেনার কথা ছিল । হয়ত দুটো কিনে নিয়েছে । ঝন্টু যেই বলতে যাবে " বল কিনে এনেছিস ? " ঠিক তখনই পটা বলে উঠল,
" দ্যাখ্ ঝন্টু, ভালো করে দেখে ভেবেচিন্তে বল ! ভুল বললে কিন্তু পাবি না ! "
ঝন্টুর মনে খটকা লাগল । পটা হঠাৎ 'পাবি না' বলল কেন ? কি পাবার কথা বলছে পটা ?
ঝন্টু চিন্তিত হল । ঝন্টু আরোও ভালো করে পটার পকেট দুটো পরীক্ষা করতে লাগল । মনে হচ্ছে না যে পকেটে বল আছে । বরং ছোটো ছোটো অনেকগুলো বলের মতো কিছু একটা রয়েছে তার দুই পকেটে ।
ঝন্টু অন্যদের পকেটগুলোর দিকে তাকালো । ঝন্টু লক্ষ্য করল যে ওদেরও পকেটগুলো ব্যাঙফোলা হয়ে আছে । তারমানে বল নয় ; অন্য কিছু ! কিন্তু কি হতে পারে ? ঝন্টুর মগজে প্রবল চাপ পড়ল ।
কাপড়ের ওপর থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে জিনিসটা মার্বেলের সাইজের মতো । হঠাৎ ঝন্টুর মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল - এ নিশ্চয় কুল হবে কারন ওরা ঐ ফুলবাগানটার ওদিক থেকে এল
আর ওখানেই তো দুটো বড় বড় কুলের গাছ রয়েছে ।
ঝন্টু তড়িৎ গতিতে বলল, “তোর পকেটে কুল আছে ! ঠিক বলেছি তো ?”
পটা বলল, “একদম ঠিক বলেছিস । “ তারপর পটা পকেট থেকে কতকগুলো কুল বের করে ঝন্টুর দিকে বাড়িয়ে দিল । ঝন্টু দুই হাতে মুঠো করে কুলগুলো নিয়ে নিল ।
তারপর একখানা কুল মুখে তুলতে গিয়েও আর মুখে পুড়ল না । কুল হাতে ঝন্টু মানুষঝুলনের মূর্তির মতো স্থির হয়ে বসে রইল ।
মিলন বলে উঠল, “কি রে ঝন্টু, কুল খাচ্ছিস না ? তোর কুলে পোকা নাকি ?
পাশ থেকে কামরান বলল, “আরে না না , ঝন্টুর দাঁতে পোকা !
ঝন্টু কিছু না বলে এই অপমান সহ্য করে চুপচাপ বসে রইল । কি যেন একটা ভাবছে সে !
এইবার পটা জিজ্ঞেস করল, “এই ঝন্টু, তুই কুল খাবি না ? টক নয় রে মিষ্টি, খেয়ে দ্যাখ্ ! "
ঝন্টু বোধহয় কোনো চিন্তার মহাসাগরে ডুব দিয়েছে, তাই কারো কথা শুনতেই পাই না সে !
পটা হাতে করে ধাক্কা দিতেই ঝন্টুর সম্বিত ফিরল ।
ভয় কাতর হয়ে ঝন্টু বলল, “এখনও তো সরস্বতী পূজো হয়নি ! পূজোর আগে কুল খেতে নেই, ঠাকুর রাগ করবে ! বুলটিদি বলেছে । “
মিলন বলল, “পালা এখান থেকে ! যতসব আজগুবি কথা । আমরা ওইসব মানি না, বুঝলি !
ঝন্টু আবার বলল, " এই তো শনিবারদিন বুলটিদি এক চিকচিকি কুল কিনে এনেছিল । আমি চাইলে পরে বলল পূজোর আগে নাকি কুল খেলে লেখাপড়া হবে না, পরিক্ষায় গোল্লা পাবো ।
তারপর ঠাকুমাকে জিজ্ঞেস করলাম ঠাকুমাও তো তাই বলল !"
কামরান ঝন্টুকে বলল, " না ভাই ! খাস না ! পাপ হবে ! পরিক্ষায় ফেল করবি ভাই ! " এই বলে কামরান একসাথে দুইতিনখানা কুল মুখে পুড়ে গরুছাগলের মতো চিবোতে লাগল ।
শ্যামল আর মিলন ঝন্টুর দিকে তাকিয়ে হো হো করে হাসতে লাগল । পটা কিন্তু হাসল না আর ঝন্টুর হাতের কুল হাতেই রয়ে গেল ।
পটা আশ্বাস দিয়ে বলল, “এইসব ফালতু কথা । তোর বুলটিদি তোকে ঠগিয়েছে, তোকে ঢপ দিয়েছে ! যাতে তুই ওর কাছে কুল না চাস সেই জন্যই তোকে ভয় দেখিয়েছে বুঝলি !
পটা ফের বলল, " জিজ্ঞেস করলি না তাহলে তুমি কেন কুল এনেছো ?"
ঝন্টু বলল, “জিজ্ঞস করলাম তো ! বলল যে আচার করবে !”
- কাঁচা কুল, না পাকা ?
- কাঁচা কুল !
- তার মানে নির্ঘাত ঢপ !
- কেনে ?
- কাঁচা কুল দিয়ে তোর মাথায় আচার দেবে নাকি !
ঝন্টু চুপ করে গেল । তার মানে বুলটিদি তাকে মিথ্যা কথা বলে ঠকিয়েছে । পটার কথায় ঝন্টু সাহস পেল । তারপর একটা কুল টপ করে মুখে পুড়ে নিল । কিন্তু ভয় এখনও তার গা ছাড়েনি ।
বুকে ভীতি নিয়েই পটার কথায় ঝন্টু মিষ্টি কুলগুলো এক এক করে চিবোতে লাগল ।
কিছুক্ষণ পর হঠাৎ একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেল । কুল খেতে খেতে অজান্তেই একটা কুলের আঁটি গিলে ফেলল ঝন্টু । এর আগেও বহুবার কুল খেয়েছে ঝন্টু কিন্তু কোনো দিন কুলের আঁটি গেলেনি ।
কিন্তু আজকে ঝন্টু একখানা আঁটি গিলে ফেলেছে ।
এটা কি করে ফেলল ঝন্টু ? এবার কি হবে ?
ঝন্টু পটাকে বলল, “ভাই আমি একটা কুলের আঁটি গিলে ফেলেছি ! কিছু হবে না তো ভাই ?”
পটা কিছু বলার আগেই কামরান চোখ ফেঁড়ে ফেঁড়ে বলল, “এ কি করলি রে ঝন্টু ! পুরো গিলেই ফেললি ! যা ! যা ! এবার তোর পেটটা পুরো চৌঁচির হয়ে যাবে । জানিস্ তো কুলের আঁটি কি শক্ত হয় ।
হজম হবে না, পেটের ভিতরেই থেকে যাবে । সময় থাকতে থাকতে বের না করলে পেটে গাছ জন্মাবে । গাছ বাড়তে বাড়তে তোর পেটটা পুরো ফাটিয়ে দেবে ! তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না !
অপারেশন করে পেট কেটে আঁটি বের করতে হবে । বুঝে করগা এবার ! যা মরগা, এবার তুই গেলি ঝন্টু ! যা... !! "
কামরানের মুখ থেকে এই অশুভ কথাগুলো শুনে ঝন্টুর মুখটা কেমন যেন কুঁকড়ে গেল । বাংলার পাঁচের মতো মুখটা করে ঝন্টু পটাকে জিজ্ঞেস করল, " হ্যাঁ রে পটা কামরান সত্যি বলছে ভাই ?
পেট কেটে আঁটি বের করতে হবে ? না হলে গাছ বেরোবে ? "
পটা মুখে কিছু না বলে আকাশপাণে মুখ করে কি যেন ভাবতে লাগল । আর মিলন হাঁ করে ঝন্টুর দিকে তাকিয়ে রইল । কিন্তু কামরান ফ্যাঁক ফ্যাঁক খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসতেই থাকল ।
ঝন্টুর যে কি হচ্ছে তা ঝন্টু ছাড়া আর কারোর বোঝার সাধ্যি না ।
ঝন্টুর গা-হাত-পা থরথর করে কাঁপতে লাগল । বুকটা প্রচন্ড জোরে ঢিব ঢিব করতে শুরু করে দিল । চোখ দুটো বিস্ফারিত হয়ে গেল, এই বোধহয় কোটর থেকে বেরিয়ে এসে মাটিতে পড়ল বলে । ঝন্টুর গা পাক দিতে লাগল ।
ঝন্টু কি করবে কিছু বুঝতে পারছে না । হাঁপানি রোগীর মতো হাঁপাতে লাগল ঝন্টু আর হাঁপাতে হাঁপাতে পটাকে বলল, “এখন আমি কি করবো রে পটা !
পটা বলল, " দাঁড়া ভাবছি ! কিছু একটা করতে হবে ! চল বাড়ীতে গিয়ে বুলটিদিকে বলি গা !"
পটা কামরানকে বলল, " তুই ইয়ারকি মারছিস না তো আবার ! "
কামরান মুখ গম্ভীর করে বলল, “মোটেই না ! আমার নানির বাড়ি মসাকগ্রামে একটা ছেলে কুলের আঁটি গিলে নিয়েছিল । একমাস পরে তার খুব পেটে অসহ্য ব্যথা করতে লাগল । তখন ওর মা বাবা ওকে হাসপাতালে ভর্তি করল ।
তারপর পেটের যখন ছবি হল তখন গিয়ে ধরা পড়ল যে পেটের ভিতর গাছ হয়েছে । তারপর অপারেশন করে পেট কেটে আঁটি সমেত গাছটাকে বের করতে হল । আর কিছুদিন দেরি হলে গাছ টা বাড়তে বাড়তে পেটটা ফাটিয়ে দিত । “
এই কথাগুলো শুনে ঝন্টু আর স্থির থাকতে পারল না । ভয়ে কাঁদতে লাগল ঝন্টু ।
তাহলে কি ঝন্টুরও পেট কেটে আঁটি বের করতে হবে ; নাহলে পেটে গাছ জন্মাবে ?
ঝন্টু আর একদন্ডও দাঁড়াল না । আস্তে আস্তে বাড়ির দিকে হাঁটতে লাগল । পটা পিছন পিছন হাঁটতে লাগল ।
ঝন্টু পেটে ব্যথা অনুভব করতে লাগল । কেমন যেন মাঝেমধ্যে পেটটা মোচড় দিচ্ছে ।
তাহলে কি কুলের বীজ থেকে অঙ্কুর বেরোতে শুরু করে দিয়েছে নাকি ? নাহলে এত ব্যথা হচ্ছে কেন । ঝন্টু এবার আরোও জোরে জোরে হাঁটতে লাগল । পটাও ঝন্টুর সাথে সাথে হাঁটতে লাগল ।
এখনই বাড়ি গিয়ে বুলটিদিকে সবকিছু বলা দরকার । শীতকালেও ঝন্টুর কপালে, পিঠে, বুকে, গলায়, মাথায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে লাগল । ঝন্টু আর হাঁটতে পারছে না, ওর মাথা বোঁ বোঁ করে ঘুরছে ।
ঝন্টুর গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে । পা দুটো থর থর করে কেঁপেই চলেছে । যাহোক করে ঝন্টুকে বাড়ি পৌঁছতেই হবে ।
বাড়ির সদর দরজার কাছে এসে প্রায় মূর্ছা গেল ঝন্টু । পটা ঝন্টুকে বগলদাবা করে ধরে রাখল । দরজার কড়া নাড়তে লাগল পটা ।
কিছুক্ষণ পর বুলটিদি এসে দরজা খুলল আর দরজা খুলতেই বুলটিদি ঝন্টুর এই হাল দেখে হতবাক হয়ে বলল,
“ঝন্টু ! ঝন্টু ! তোর কি হয়েছে ? কি হয়েছে রে পটা ! ঝন্টুর এই অবস্থা কি করে হল ?”
ঝন্টু কথা বলতে চাইল কিন্তু তার মুখ থেকে ভালো করে কথা বেরোল না ।
তখন পটা বুলটিদিকে বলল, " দিদি ঝন্টু কুলের আঁটি খেয়ে ফেলেছে । ওর পেটে লাগছে । ওর পেট কেটে আঁটি বের করতে হবে, নাহলে গাছ জন্মাবে । "
এই কথা শুনে বুলটিদির মাথায় হাত । পটাটা কি যা তা বলে যাচ্ছে ! এই সব অবান্তর কথা শুনে বুলটিদি পটাকে ধমক দিতে যাচ্ছিল কিন্তু কি একটা ভেবে আর ধমক দিল না ।
তারপর পটা আর বুলটিদি ঝন্টুকে ধরাধরি করে রান্নাঘরে নিয়ে এল । ঝন্টু তখনও অজ্ঞান হয়ে যায়নি চোখ পিটপিট করে বুলটিদির দিকে তাকিয়ে থাকল ।
তারপর বুলটিদি একটা কাঁচের বয়েম থেকে কিছুটা তেঁতুলের আচার বের করে বলল, “ঝন্টু এই নে, তাড়াতাড়ি এই আচারটা খেয়ে নে ! সব ঠিক হয়ে যাবে !
তোর কিচ্ছু হবে না !
দেখিস্ আবার তেঁতুলের বীজগুলো গিলে ফেলিস না যেন ! তাহলে অন্য ব্যবস্থা নিতে হবে । “
ঝন্টু একটুও বিলম্ব না করে সঙ্গে সঙ্গে আচারটা মুখে পুড়ে নিল আর সাবধানে তেঁতুলের বীজগুলো বের করে ফেলে দিল ।
ভয়ঙ্কর টক তেঁতুলের আচার মুখে দেওয়ামাত্র ঝন্টুর যে মুখটা এতক্ষণ বাংলার পাঁচ হয়েছিল সেই মুখ এক এক করে বাংলার ছয় সাত আট নয় দশ হয়ে গেল ।
পটা বুলটিদিকে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা বুলটিদি তেঁতুলের আচার খেলে ভালো হবে ?
বুলটি বলল, নিশ্চয় হবে ! আলবাত্ হবে !
- কি করে ?
- কেন ! আমাদের বিজ্ঞান বইতে লেখা আছে ।
- কি লেখা আছে দিদি ?
- " কি আবার ! ঐ তো তেঁতুলের মধ্যে অ্যাসিড আছে ! আর সেই অ্যাসিডই পেটে গিয়ে কুলের আঁটিটাকে গলিয়ে দেবে । ব্যস্ সব ঠিক হয়ে যাবে । "
- " তাহলে আর গাছ হবে না বলো ?"
- "গাছ হতেই পারে না । "
- " ভাগ্যিস আমি কোনো দিন কুলের আঁটি গিলি নি । আর তাছাড়া গিললেই বা কি ? ভয়ের তো কিছুই নাই । তুমি তো উপায় বাতলে দিলে । ভুলেও যদি কখনও কুলের আঁটি পেটে চলে যায় তবে তেঁতুলের আচার খেয়ে নেব । "
ঝন্টু ওদের দুজনার কথা মন দিয়ে শুনল । ঝন্টু নিশ্চিন্ত হল কারন আর তার পেট কাটতে হবে না । অপারেশন করাতে হবে না । আধমরা ঝন্টু আবার চনমনে হয়ে গেল । আর কোনো ভয় লাগছে না ওর ।
একটু পরেই ঝন্টুর মা ছাদ থেকে নেমে এসে তিনজনাকে রান্নাঘরে দেখে বললেন, “তোরা রান্নাঘরে কি করছিস রে । কি চুরি করে খাচ্ছিস অ্যাঁ ? আচারের বয়েমটা নিচে কেন ? আচার চুরি করে খাওয়া হচ্ছে না !
দাঁড়া খাওয়াচ্চি তোদের আচার ! এই বলে ডালঘুন্নী হাতে করে তেড়ে এলেন ঝন্টুর মা ।
বুলটিদি আগেই কেটে পড়েছিল । ঝন্টু আর পটাও একনিমেষে ছুটে রান্নাঘর থেকে পালিয়ে বাঁচলো ।। 😓😂😊
সমাপ্ত

No comments:
Post a Comment